জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন।

0
9
জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন।
জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন।

Table of Contents

আমরা সকলেই জানি বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছর হয়ে গেলেই জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়া যায়। তবে আপনি ১৮ বছরের আগেই জাতী পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশে ১৬ বছর হয়ে গেলেই জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করা যায়।

জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন।

আমরা আজকে জানবো কিভাবে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করতে হয়। কিভাবে আমরা জতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করব। এবং কিভাবে অনলাইেন আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন এবং আপনার কম্পিউটারের সাহায্যে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করবো।

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য কি কি প্রয়োজন ?

বর্তমান সময়ে জাতীয় পরিচয় পত্র করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। আপনি চাইলে যেকোনো সময় ঘরে বসে আপনার কাছে থাকা স্মার্ট ডিভাইস দিয়ে এ আবেদন করতে পারেন। শুধু আবেদন করার জন্য আপনাকে জানতে হবে কোন কোন মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
আপনার যদি ১৬ বছর হয়ে থাকে এবং আপনি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন কিন্তু আপনি এখনোও জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন না করে থাকেন তাহলে অনলাইনে একটি ফর্ম পূরনের মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করে ফেলুন। নিচের দেওয়া গাইডলাইন অনুসরণ করে আবেদন করুন।

জাতীয় পরিচয়পত্র করতে কি কি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।

প্রথমে আপনাকে একটি ফর্ম পূরন করতে হবে। তারপর আপনি আপনার ইউনিয়ন, উপজেলা বা থানা মোট কথা জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনের কার্যালয়ে গিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিবেন। জমা দেওয়া শেষ হলে আপনার কাগজপত্র যাচাই করা হবে এবং যাচাই করা শেষ করা হলে আপনাকে আরেকটি কক্ষে পাঠানো হবে। সেখানে আপনার হাতের আঙ্গুলের ছাপ, আই স্ক্যান তারপর আপনার ছবি তোলা হবে।
কিন্তু এই পর্যন্ত আসার জন্য আপনার নিচের দেওয়া যোগ্যতা গুলো থাকতে হবে।
যেমন:
১. আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২. আপনি আগে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেন নি।
৩. অবশ্যই আপনাকে মিনিমাম ১০ বছর বয়সের অধিকারী হতে হবে।
বিদ্রঃ উপরে যা যা উল্লেখ করা হয়েছে তা কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে বলা হবে।

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করতে কি কি লাগে?

জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন।

জাতীয় পরিচয় পত্র করতে আপনার যা লাগবে :

১. আপনার জন্ম নিবন্ধন কার্ড।
২. আপনার পাসপোর্ট (যদি থাকে)।
৩. ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)।
৪. আপনার এসএসসি এরসনদ পত্র (যদি থাকে)।
৫. বাবা-মার ভোটার আইডি কার্ডপর ফটোকপি অবশ্যই লাগবে।
এই ডকুমেন্টস গুলো অবশ্যই আপনারা সংগ্রহ করে নিবেন। নিচে আমরা জানবো জাতীয় পরিচয় পত্র করার নিয়ম।

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করার নিয়ম।

যারা এখনোও জাতী পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন তারা জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফর্ম পূরনের মাধ্যমে আবেদন করে ফেলতে পারেন। কিভাবে করবেন তা স্টেপ বাই স্টেপ বলে দেওয়া হবে। অনলাইনে আবেদন করা জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন করার নিয়ম অত্যান্ত সহজ এবং সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম এবং কম সময়ের মধ্যেই করে ফেলতে পারবেন।
আবেদন সম্পূর্ণ হলে জাতীয় পরিচয় পত্র করার জন্য যে কাগজ পত্র লাগবে তা নিয়ে চলে যাবেন NID সংশ্লিষ্ট অফিসে সেখানে। সেখানে আপনার পরিচয় যাচাই করা হবে।
যাচাই করা হয়ে গেলে আপনার হাতের আঙ্গুলের ছাপ,চোখ স্ক্যান এবং ছবি তোলা হবে। এবং আপনাকে একটি আবেদনের স্লিপ দেওয়া হবে এই স্লিপ এর মাধ্যে একটি নাম্বারদেওয়া থাকবে এটিই সব কেননা এই নাম্বারটি দিয়েই আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র গ্রহণ করতে হবে। এখন আপনাকে ১০-১৫ দিন ওয়েট করতে হবে। অনলাইন থেকে আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হলেই ২০-২৫ দিনের মধ্যে আপনি অনলাইন থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

এখন আমরা জানবো NID ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন কিভাবে করবো।

অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদনের প্রথম সুফল হচ্ছে এভাবে আবেদন করলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। কারন অনলাইনে আবেদন করার সময় আপনি আপনার সকল তথ্য গুলো দেখে বুঝে দেওয়ার একটা সুযোগ পেয়ে থাকেন। আপনি ফর্মে যে তথ্য দিবেন তাই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে দেওয়া হবে। এভাবে করলে ভুল করার সম্ভাবনাই থাকে না।

নতুনদের আবেদন করার নিয়ম।

১. কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করবেন। শুরুতেই আপনি আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার এর যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করবেন। এবং গুগল সার্চ অপশনে লিখবেন NID Registration Application এটা লিখে সার্চ দিলে আপনার সামনে প্রথম যে পৃষ্ঠাটি ওপেন হবে সেটাতে ক্লিক করবেন। তারপরে সেখানে জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন আবেদন অপশন পেয়ে যাবেন।
* সেখানে ক্লিক করবেন।
* তারপর আপনি আপনার নাম দিবেন।
* আপনার মোবাইল নাম্বার টি সঠিক ভাবে দিবেন।
* আপনার জন্ম তারিখ।
* এরপর ক্যাপচা টি সঠিক ভাবে দিয়ে সাবমিট করে দিবেন।
এখন আপনার ভেরিফাই করতে হবে। আপনি যে নাম্বারটি দিয়েছেন সে নাম্বারে একটি কোড যাবে সে কোডটি ভেরিফাই এর এখানে দিয়ে ভেরিফাই করতে হবে আপনার একাউন্ট।
অবশ্য আপনি যে নাম্বারটি দিবেন সেটা যেন আপনার থাকে এবং নাম্বার টি যেন চালু থাকে। কারন এই নাম্বার আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সম্পর্কিত বিভিন্ন ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে।

এখন আপনাকে আপনার একাউন্টে আপনার সঠিক তথ্য গুলো দিতে হবে।

একাউন্ট প্রবেশ করে আপনাকে সর্বপ্রথম একটি ইউজার নেম এবং একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে। আপনি যে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছেন সেটি মনে রাখবেন বা কোথাও সেভ করে রাখবেন। কারন এই ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড টি দিয়ে আপনাকে পরবর্তীতে এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তাই অবশ্যই পাসওয়ার্ড, ইউজার নেম টি সংগ্রহ করে রাখবেন।
আপনার দেওয়া ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড টি যেন ওপর কারো সাথে না মিলে তাই মাথা খাটিয়ে ভালো ভাবে চিন্তা করে বর্ণ নাম্বার এর মিশ্রণে আপনার পাসওয়ার্ডটি লিখবেন। আবার আপনি একটি ইউজার নেম দিলেন এবং দেখলেন সেখানে Already Exists লেখা আসে তাহলে অন্য আরেকটি ইউজার নেম দিবেন। Already Exists লেখা আসার কারন এই ইউজার নেম টি আগে ব্যবহার করা হয়েছে।
২. আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রদান করতে হবে। আপনার যদি আগের স্টেপ গুলো সম্পূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে বা আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র এই ওয়েবসাইট টিতে রেজিষ্ট্রেশন সম্পূর্ণ করে থাকেন তাহলে আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড টি দিয়ে লগিন করে নিবেন। লগিন করে প্রফাইল এ ক্লিক করনেন এবং ডান পাশে থাকা এডিট অপশনে ক্লিক করবেন।

এখন আপনি ফর্ম পূরনের জন্য তিনটি স্টেপ পেয়ে যাবেন।

১. প্রথম স্টেপে আপনার নাম এক কথায় আপনার জন্ম নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী সকল তথ্য গুলো দিয়ে দিবেন। এবং প্রথম স্টেপে যে তথ্য গুলো দিতে বলবে আপনি সেই তথ্য গুলো নির্ভুল ভাবে লিখতে হবে। মনে রাখবেন এখানে তথ্য গুলো দিওয়ার সময় কোন প্রকার ভুল করলে চলবে না। অবশ্যই আপনার বাবা- মার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য যেমন নাম্বারটি দিয়ে দিবেন।
আপনার যদি ভাই – বোন থাকে আপনি তাদের তথ্য গুলো দিবেন যদি না দেন তাহলেও কোন সমস্যা নেই। যদি দিয়ে দেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার জন্য সুবিধা হতে পারে। তাই থাকলে অবশ্যই দিয়ে দিবেন। এরপর আপনি যাদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বৈবাহিক অবস্থার ইনফরমেশন গুলো দিয়ে দিবেন। অবশ্যই স্বামী বা স্ত্রীর নাম জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম অনুযায়ী দিবেন।
২.এবার আপনি দ্বিতীয় অংশে যাবেন সেখানে গিয়ে আপনাকে আপনি কি করেন যেমন : আপনার পেশা কি, আপনার লেখাপড়ার/শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং আপনি কোন ধর্মের সেটি ও দিয়ে দিবেন। তাছাড়া আরও অন্যান্য তথ্য দেওয়ার অপশন দেওয়া থাকবে সম্ভব হলে সেই তথ্য গুলো দিয়ে দিবেন। অন্যান্য তথ্য গুলো না দিলেও কোন সমস্যা নেই।
৩.এ অংশে আপনাকে আপনার পারমানেন্ট এড্রেস দিতে হবে। এখানে আপনাকে বর্তমান এবং স্থনীয় ঠিকানা দুটোই দিতে হবে।
ঠিকানা দেওয়া হয়ে গেলে নিচে দুটি অপশন পেয়ে যাবে সেখানে লিখা থাকবে (আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী ভোটার) এবং (আপনার স্থানীয় ঠিকানা অনুযায়ী ভোটার হতে চান) আপনি যে ঠিকানা অনুযায়ী ভোটার হতে চান তার পাশে টিক দিয়ে দিবেন।

তার পর আপনাকে আপনি কোন এরিয়ার ভোটার সেটি উল্লেখ করতে হবে।কোন এলাকার ভোটার সে অনুযায়ী এলাকা নির্বাচন করবেন।

এখন সাবমিট করে দিন এবং আপনাকে আরেকটি পেজে নিয়ে যাবে সেখানে আপনাকে আবার তথ্য গুলো যাচাই করতে বলা হবে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আবেদন টি নিশ্চিত করবেন এবং লাস্ট অপশনে ক্লিক করে জমা দিবেন।
এখন আপনি পুনরায় আপনার ডেসবোর্ড এ চলে আসবেন।অবশ্যই আবেদন প্রক্রিয়া টি সম্পূর্ণ করবেন তার পরে ডেস বোর্ডে আসবেন। কারন আপনি যে ইনফরমেশন গুলো দিয়েছেন তার একটি ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। সে ফর্ম টি নিয়েই আপনাকে নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে। তাই ডেস বোর্ডে ফেরত এসে ফর্ম টি ডাউনলোড করে নিবেন। এবং A4 সাইজে প্রিন্টআউট করে নিবেন।

এখন আপনাকে সেই ফর্মটি নিয়ে নির্বাচন অফিসে যাবেন।সেখানে তারা আপনার দেওয়া তথ্য গুলো যাচাই করে দেখবে।সব কিছু ঠিক থাকলে আপনাকে ছবি তোলার জন্য ডাকা হবে এবং সেখানে আপনার বিস্তারিত কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হবে যেমন: আঙ্গুলের ছাপ্, আই স্ক্যান, ছবি তোলা ইত্যাদি। ব্যাস আপনার কাজ শেষ।

এখন আপনার আবেদনটি শেষ হলে ১৫ থেকে ২০ দিন পরে একটি ম্যাসেজ পেয়ে সেখানে লিখা থাকবে আপনার আবেদনটি সঠিক ভাবে সফল হয়েছে।

এখন আপনি আপনার ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে ডেস বোর্ড থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here