যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তাদের অনেল সতর্ক থাকতে হয়। কেননা একটু অসচেতন হলে এলার্জি জনিত খাবার গ্রহন করলে চুলকানি সহ ত্বক লাল হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনাদের জিজ্ঞাসা থাকে যে এলার্জি দূর করার উপায় কি ।
এলার্জি দূর করার উপায় কি ?
আমাদের মধ্যে অনেকেই এলার্জি জনিত সমস্যায় ভুগছেন। তাই আমরা জানতে চাই এলার্জি দূর করার উপায় কি। যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের বেশ অনেক গুলো জিনিস এবং খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। এলার্জি দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে আপনার যে যে খাবার এবং সামগ্রীতে এলার্জি রয়েছে তা এড়িয়ে চলা।
যে যে সামগ্রী থেকে এলার্জি হতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১। ধুলো বালি এড়িয়ে চলা।
২। এলার্জি জনিত ধাতব অলংকার পরিধান ত্যাগ করা।
৩। এলার্জি জনিত রাসায়নিক দ্রব্য থেকে দূরে থাকা।
৪। এলার্জি জনিত ডিটারজেন্ট এবং সাবান ব্যবহার পরিত্যাগ করা।
৫। এলার্জি জনিত পারফিউম ব্যবহার পরিত্যাগ করা।
যাদের বিষেশ কোনো জিনিসে এলার্জি রয়েছে এবং শরীর যদি সেই জিনিসের স্পর্শ পায় তখন হিস্টামিন এবং সেরোটনিন রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়ে থাকে। যার ফলে আপনার ত্বক লাল হয়ে যায়, অতিরিক্ত চুলকানি শুরু হয়, শ্বাসকষ্ট এবং নাক বন্ধ হয়ে যায়।
বেশিরভাগ সময় সাবান এবং ডিটারজেন্ট থেকেই এলার্জি হয়ে থাকে। তাই আপনারা ডিটারজেন্ট এবং সাবান দিয়ে থালা, বাসন এবং পাতিল ধোঁয়ার সময় হতে গ্লাবস পড়ে নিবেন।
যদি আপনার অলংকারে এলার্জি থাকে তাহলে সে অলংকার পরিধান ত্যাগ করুন। যদি আপনার প্রদাহ জনিত এলার্জি হয়ে থাকে তাহলে দ্রত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। চিকিতসকের পরামর্শ নিয়ে কয়েকটি মলমের মাধ্যমে তা দূর করতে পারেন।
যদি চুলকানির ফলে ত্বক লাল হয়ে যায় তাহলে গোসল করে নিন এবং পাতলা কাপর পরিধান করুন। যাতে শরীরে বাতার প্রবেশ করতে পারে। যদি কোন রাসায়নিক সামগ্রী থেকে এলার্জি থাকে তাহলে সে রাসায়নিক দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন।
পড়ুন: এলার্জি ঔষধ এর নাম
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় ?
আমাদের সকলের কাছেই এলার্জি একটি পরিচিত রোগের নাম। যা আমাদের শরীরের ত্বক থেকে শুরু করে রক্তে পর্যন্ত হয়ে থাকে। রক্তে এলার্জি হয় মূলত বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে। আমরা অধিক সময় না জেনে যে খাবার গুলোতে এলার্জি রয়েছে সে খাবার গুলো গ্রহন করে ফেলি । যার ফলে রক্তে এলার্জির মাত্রা বেড়ে যায়।
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় হলো প্রথমে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে এবং যে যে খাবার গুলোতে আপনার এলার্জি রয়েছে সে খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে। সবচেয়ে ভালো হবে আপনার যে খাবার গুলোতে এলার্জি রয়েছে তার একটি তালিকা করা। তবে এলার্জি রক্তের গ্রুপ বেধে আলাদা হয়ে থাকে।
পড়ুন: এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়
যেমন B এবং A গ্রুপের রক্তে এলার্জি দেখা যায় না। বিষেশ করে A এবং B গ্রপের ব্যক্তির রক্তে এলার্জি হয় না। রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় হলো যে খাবার গুলোতে আপনার এলার্জি রয়েছে তা তালিকাবদ্ধ করা এবং সে খাবার গুলো এড়িয়ে চলা। যদি রক্তে এলার্জি হয়ে যায় তাহলে কয়েকটি ঔষধের মাধ্যমে তা দূর করতে পারেন।
নিচে রক্তের এলার্জি দূর করার ঔষধের নাম উল্লেখ করা হলো:
- Fenadin 180mg
- Fexo 120 mg
রক্তে এলার্জি হলে এই দুটি ঔষধের একটি গ্রহন করতে পারেন। এই ঔষধ গুলো রক্তের এলার্জি দূর করতে দারুণ ভাবে কার্যকরী হয়ে থাকে।
রক্তের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় ?
রক্তে এলার্জি হয়ে থাকে মূলত আমরা না জেনে এলার্জি জনিত যেসব খাবার খাই তা থেকে। বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকেই এলার্জি হয়ে থাকে।
যেমন:
- গরুর মাংস
- চিংড়ি মাছ
- বেগুন
- ইলিশ মাছ
- হাঁসের ডিম ইত্যাদি।
এই খাবার গুলো উচ্চ এলার্জি যুক্ত খাবার। এই খাবার গুলো খেলে শরীরের বিভিন্ন যায়গায় চাকার মতো লাল দাগ হয়। এবং তা থেকে শুরু হয় মারাত্মক চুলকানি ।
আমাদের রক্তে এলার্জি হওয়ার মুল কারন হলো আমরা যখন না জেনে এলার্জি জনিত খাবার খেয়ে থাকি সে সময় রক্তে প্রচুর পরিমানে হিস্টামিন রিলিজ হয়। এই হিস্টামিনই আমাদের রক্তে এলার্জি তৈরি করে থাকে । তাই আমাদের রক্তে এই হিস্টামিনের মাত্রা কমানোর জন্য আপনার দরকার অ্যাান্টিহিস্টামিন। রক্তে অ্যাান্টিহিস্টামিন বড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি ট্যাবলেট রয়েছে যা নিয়ম করে খেলেই রক্তে এলার্জি কমে যায়।
রক্তের এলার্জি একেবারে দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। চলুন জেনে নিই রক্তে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়। আপনারা সবাই নিম পাতা সম্পর্কে জানেন এই নিমপাতা এলার্জি দূর করতে অত্যান্ত কার্যকরীর হয়। প্রথনে একসাথে অনেক গুলো নিমপাতা রোদে শুকাতে হবে। রোদে শুকিয়ে পাতা গুলো যখন মচমচে হবে তখন তা গুরো করে পাউডারের ন্যায় করে নিতে হবে। তার একটি কোটার মধ্যে সংরক্ষণ করুন।
তারপর এক গ্লাস পানি নিন এতে এক চা চামচ নিম পাতার পাউডার দিন সাথে এক চা চামচ ইসুব গুল দিন। তারপর এটি মিক্স করে সেবন করুন। এভাবে টানা ৩০ দিন সেবন করলে আপনার রক্তে এলার্জি দূর হয়ে যাবে এবং আপনি যেকোনো ধরনের খাবার গ্রহন করতে পারবেন।
চোখের এলার্জি দূর করার উপায় কি ?
এলার্জি একটি মারাত্মক এবং বিরক্তিদায়ক রোগ। এই রোগটি হলে আমাদের শরীরে চুলাকানি জ্বালাপোড়া শুরু হয় এবং আমাদের বেশ কিছু খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। শরীরের এলার্জির প্রভাব আমরা খুব সহজেই সহ্য করে নেই কিন্তু চোখে এলার্জি হলে আমাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই এটি দ্রুত নিরাময় করতে জানতে চাই চোখের এলার্জি দূর করার উপায়।
একজন ব্যক্তি চোখের অ্যালার্জিতে তখনই আক্রান্ত হয় যখন তার শরীরের ইমিউন সিস্টেমে কোন ধরনের সমস্যা থাকে। গরমের সময় প্রচুর ধুলোবালি থাকে এই ধুলোবালির কারণে চোখে অ্যালার্জির আক্রমণ হয়ে থাকে। তাই আমাদের সকলকে চোখের অ্যালার্জির ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে। চোখের এলার্জি ঔষধ খাওয়ার কথা চিনতা করার আগে জানতে হবে আপনার চোখে এলার্জি রয়েছে কি না।
নিচে চোখে এলার্জির কয়েকটি লক্ষণ উল্লেখ করা হলো:
- চোখ প্রচন্ড লাল হয়ে যাওয়া।
- চোখে অতিরিক্ত চুলকানি হওয়া।
- চোখ থেকে অনবরত পানি পড়তে থাকা ।
- চোখের ভেতরে ময়লা রয়েছে এমন মনে হওয়া।
- চোখ স্বাভাবিকের তুলনায় ফুলে যাওয়া।
চেখের এলার্জি দূর করার উপায়।
চোখ আমাদের দেহের একটি সংবেদনশীল অঙ্গ। তাই আমাদের চোখে কোনো ধরনের সংক্রমণ হলে আমাদের অচল হয়ে পড়তে হয়। চোখে এলার্জি হলে আমাদের প্রচন্ড যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়। চোখ লাল হয়ে ফোলে যায় এবং অনেক চুলকানি হয় কিন্তু চুলকাতেও পারি না। তাই আমরা দ্রুত চোখের এলার্জি নিরাময় করতে চাই।
চোখের এলার্জি দূর করার উপায় :
- চোখের এলার্জি দূর করার জন্য পানির গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। চোখে এলার্জি হলে প্রচুর পরিমানে পানি দিতে হবে।
- চোখের অ্যালার্জির জন্য সবচেয়ে কার্যকরী প্রতিনাশক হচ্ছে গোলাপ জল। চোখে ২/৩ ফোঁটা গোলাপ জল দিলে অ্যালার্জি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।
- একগ্লাস পানির মধ্যে ৩ চা চামচ লবণ দিয়ে ২০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। তারপর ফোটানো পানি ঠান্ডা হলে এক টুকরা পরিষ্কার তুলা দিয়ে আক্রান্ত চোখের কোণা মুছে দিন।
- আমলকি চোখের এলার্জি দূর করতে অত্যান্ত কার্যকরী।একটানা ২/৩ সপ্তাহ প্রতিদিম রাতে একটি আমলকি নিন এবং এর সাথে মধু মিশিয়ে খান। এতে করে আপনার দেহে ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি হবে। যা অ্যালার্জিকে আপনার কাছ থেকে দূরে রাখবে ।
উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করলে আপনার চোখের এলার্জি দূর হয়ে যাবে।
চোখের এলার্জির ড্রপ এর নাম।
অনেক সময় দেখা যায় যে চোখে এলার্জি হলেও আমরা প্রথমদিকে বুঝতে পারি না। যার ফলে চোখে এলার্জি তীব্র আকার ধারন করে। তখন আমাদের চোখের এলার্জির ড্রপ ব্যবহার করতে হয়।
নিচে কয়েকটি চোখের এলার্জির ড্রপ এর নাম উল্লেখ করা হলো:
- Dexagent – ডেক্সাজেন্ট
- Lovicin – লোভিসিন
- Olopatadin – অলোপেটাডিন
- Alarid – এ্যালারিড
- Olpadin – অলপাডিন
- Alercon – এ্যালারকন
- Alacot – এ্যালাকট
- Patalon – পাটালন
- Olafix DS – অলাফিক্স ডিএস
- Supraphen – সুপ্রাফেন
চোখে এলার্জি হলে ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী উল্লেখিত ড্রপ গুলোর যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন।
সুস্থতা থেকে আরও পড়ুন