Online Earningশরীর ও স্বাস্থ্য

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।

তরমুজ গরমকালে মানুষের কাছে অতি পরিচিত এবং অত্যান্ত প্রয়োজনীয় একটি ফল। আমরা সকলেই জানি গরমকালে তরমুজ আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেশন জনিত সমস্যা থেকে কতটা উপকার করছে।তরমুজ আমাদের শরীরের পানি শূন্য যে অভাব রয়েছে তা পূরন করতে সাহায্য করছে।আমরা তরমুজের উপকারিতা সম্পর্কে জানলেও তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানি না।

এই আর্টিকেলে তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা
তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।

আমরা অনেকেই দেখা যায় তরমুজ খাওয়ার সময় তরমুজের বীজ ফেলে দেন। আমরা তরমুজের উপকারিতা সম্পর্কে জানলেও তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানি না। যদি আপনিও তরমুজ খাওয়ার সময় তরমুজের বীজ ফেলে দেন তাহলে এটা করা থেকে বিরত থাকুন।

আপনি যদি একবার তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন তখন আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। আপনারা কি জানেন যে তরমুজের বীজের একটি নাম ও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা তরমুজের বীজকে চারমগজ নামে আখ্যায়িত করেন।

গরমের সময় তরমুজ আমাদের শরীরকে এক প্রশান্তির অনুভুতি এনে দেয়। আমরা যখন তরমুজ খাই তখন যদি তরমুজের বীজে কামড় পরে তবে আনাদের মুখ শিউরে ওঠে এবং তখনই তা ফেলে দেই।

তরমুজ এবং তরমুজের বীজ বহু গুণে সমৃদ্ধ তা আমরা অনেকেই জানি না। না জানার ফলে তরমুজের বীজ আমরা ফেলে দেই। এই তরমুজের বীজ আপনাকে বিভিন্ন মারাত্মক ক্ষতি এবং অসুখ থেকে বাঁচাতে পারে।

 

তরমুজের বীজের বিভিন্ন উপকারিতা।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা
তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমেরিকার এবং এবং লন্ডনের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আপনারা যখন তরমুজ খাবেন তখন তরমুজের বীজগুলো ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করে রাখবেন। সংগ্রহ করার পরে তা ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকাতে দিবেন রোদে ভালোভাবে শকিয়ে তা খাবেন।

এখন আমাদের মাথায় প্রশ্ন আসবে যে কেন আমি তরমুজের বীজ খাবো এবং তরমুজের বীজ শুকিয়ে খেলে আমার কোন উপকারে আসবে। আমরা জানি যে একজন মানুষের দৈনিক কি পরিমান প্রোটিনের প্রয়োজন হয়।

আমাদের দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। এই প্রোটিন আমাদের দেহ গঠন এবং দেহের বৃদ্ধিতে সরাসরি অংশ গ্রহণ করে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে মানবদেহের জন্য প্রোটিন কতো প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।

তাই আমরা প্রোটিন জাতীয় নানা ধরনের খাবার খেতে চাই। আমরা অনেক প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলেও দেহের জন্য প্রয়োজন পরিমান প্রোটিন যোগান দিতে পারি না। কিন্তু আপনি যদি দৈনিক পরিমান মতো তরমুজের বীজ আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন তাহলে আপনার দেহের ৬০ % প্রোটিনের যোগান এই তরমুজের বীজ আপনাকে প্রদান করবে।

 

তরমুজের বীজের গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন গুলো।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা
তরমুজের বীজের গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন গুলো।

তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন গুলো আপনি তরমুজের বীজের মধ্যে পেয়ে যাবেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভিটামিন হলো ভিটামিন ‘বি’। ভিটামিন ‘বি’ আমাদের দেহের স্নায়ু তন্ত্র এবং পরিপাক তন্ত্রকে সুস্থ এবং সবল রাখতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তাছাড়া আমাদের শরীরে ত্বককে সুন্দর নিওসিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ত্বকেরও যত্ন নিতে পারেন।

আমরা সকলেই চাই আমাদের ত্বককে আরও সুন্দর আরও উজ্জ্বল করতে এর জন্য আমরা নানা রকমের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি। তবে আপনি যদি নিয়মিত পরিমান মতো তরমুজের বীজ খান তাহলে তরমুজের বীজে থাকা নিওসিনের প্রভাবে আপনার শরীরের ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে।

তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ ও রয়েছে যা মানবদেহের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তরমুজের বীজ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং এসিড রয়েছে যা আমাদের দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে।

 

হার্টের জন্য তরমুজের বীজের উপকারিতা।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।
হার্টের জন্য তরমুজের বীজের উপকারিতা।

আমরা অনেকেই জানি যে আমাদের হার্টে সমস্যা হয় মূলত ব্লাড সার্কুলেশনের কারনে। তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে আপনার দেহে ব্লাড সার্কুলেশনের পরিমান একদম নরমাল হয়ে যাবে।

যার ফলে হার্টের যেকোনো ধরনের রোগ বা সমস্যার সমাধান তরমুজের এই বীজ নিয়মিত পরিমান মতো খাওয়ার মাধ্যমে পেতে পারেন। তরমুজ খাওয়ার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে আপনি রেহাই পেতে পারেন।

তাছাড়া আপনার লিভারের যেকোনো রোগের প্রতি শোধক হিসেবে আপনি তরমুজের বীজ খেতে পারেন। তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে লিভার সবসময় পরিষ্কার থাকবে। তরমুজ খাওয়ার ফলে মানুষের একটি কমন রোগ ডায়েবিটিস হওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।

 

গর্ভবতী মায়ের জন্য তরমুজের বীজের উপকারিতা।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।
গর্ভবতী মায়ের জন্য তরমুজের বীজের উপকারিতা।

গর্ভবতী মায়ের জন্যে তরমুজের বীজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা তরমুজের বীজে রয়েছে মানবদেহের জন্য বিভিন্ন খনিজ উপাদান যার ফলে গর্ভবতী মায়েরা যদি তরমুজের বীজ খান তাহলে তার রোগ সাধনে এই তরমুজের বীজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আমরা অনেকেই জানি যে তরমুজের বীজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেমনঃ ফলেট, ম্যাগনেশিয়াম ও লোহা রয়েছে যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

 

চুল বৃদ্ধিতে তরমুজের বীজের উপকারিতা।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।(6)
চুল বৃদ্ধিতে তরমুজের বীজের উপকারিতা।

অন্যদিকে চুলের বৃদ্ধিতেও তরমুজের বীজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান গুলো হলো আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রোটিন। এক কাপ তরমুজের বীজ মানবদেহের প্রায় ৬০% প্রোটিনের চাহিদা পূরন করে থাকে।

তাই তরমুজের বীজ খাওয়া ফলে মেয়েদের চুল অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পাবে। আমরা অনেক সময়ই একটি নরমাল সমস্যায় পরি তা হচ্ছে আমাদের মাথার চুল পরার সমস্যা।

নিয়মিত পরিমান মতো তরমুজের বীজ সেবন  করার  ফলে  আমরা  আমাদের মাথার চুল পরাকে রোধ করতে পারি। কিছুদিন তরমুজের  বীজ নিয়ম মাফিক সেবন করলে চুল পরা অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে।

আপনার চুলের যে আগা ফাটা এবং চুল ভেঙে পরেছে এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে আপনি নিস্বন্দেহে তরমুজের বীজ খেতে পারেন।

নিয়ম মাফিক তরমুজের বীজ খেতে পারলে আপনার চুলের সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাছাড়া চুলকে কমল এবং রেশমি কালো করতে তরমুজের বীজের ভূমিকা অপরিসীম।

 

আপনার দেহের ত্বক যদি পুষ্টিহীনতার কারনে যদি বাজ পরে যায় এবং নিস্তেজ হয়ে পরে সেক্ষেত্রে তরমুজের বীজ তা রোধ করতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

তাছাড়া মুখে যদি ব্রন উঠে তাহলে তরমুজের বীজ খাওয়ার মাধ্যমে তা রোধ করতে পারবেন। তরমুজের বীজ থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাান মুখের ব্রন উঠা রোধ করে এবং মুখের ব্রন কমাতে সাহায্য করে থাকে।

 

তরমুজের বীজ খাওয়ার উপায়।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।
তরমুজের বীজ খাওয়ার উপায়।

তরমুজের বীজ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। আমরা বেশির ভাগ মানুষই তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে না জানার কারনে এ বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকি। আবার অনেকে দেখা যায় তরমুজ খাওয়ার সময়ই এই বীজ ও খেয়ে ফেলে।

এভাবে তরমুজের বীজ খেয়ে ফেললেও কোন সমস্যা নেই। অনেকেই দেখা যায় আবার ভিবিন্ন উপায়ে তরমুজের বীজ খেয়ে থাকে। তরমুজের বীজ খাওয়ার সঠিক নিয়ম গুলো হলোঃ তরমুজ খাওয়ার সময় তরমুজ থেকে তরমুজের বীজ গুলোকে আলাদা করে রাখবেন।

এরপর এই বীজ গুলোকে ভালো ভাবে ধুয়ে রোদে শুকাতে দিবেন। শুকানো হয়ে গেলে দেখবেন তরমুজের বীজের গুলো অনেকটাই চিজের মতো হয়ে গেছে তখন তরমুজের বীজ গুলো খেতে আপনার অনেক সুস্বাদু মনে হবে।

তবে তরমুজের বীজের স্বাদ বাড়াতে আপনি শুকনো তরমুজের বীজের সাথে গোলমরিচের গুঁড়া, লবন এবং জলপাইের তেল একত্রে মিশিয়ে নিয়ে তার পর খেতে পারেন। এভাবে তরমুজের বীজ খেলে এই বীজ অনেক সুস্বাদু মনে হবে।

 

তুরমুজের বীজ খাওয়ার অপকারিতা গুলো।

 

তরমুজের বীজের উপকারিতা ও অপকারিতা।
তুরমুজের বীজ খাওয়ার অপকারিতা গুলো।

তরমুজের বীজ মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। তবে আমরা জানি যে সব খাবারেরই কিছু অপকারিতা রয়েছে। মানবদেহের জন্য প্রতি দিন ১৫ থেকে ২০ গ্রামের বেশি তরমুজের খাওয়া উচিত নয়।

তরমুজ যেমন গর্ভবতী মায়ের অনেক উপকারে আসে ঠিক তেমনি ভাবে অধিক পরিমানে তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে অনেক অপকারও করে থাকে।

অধিক পরিমান তরমুজের বীজ খাওয়ার ফলে মানবদেহের মধ্যে শর্করার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায় যা ডায়েবিটিস রোগি এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরে। তাই দৈনিক ১৫ থেকে ২০ গ্রামের বেশি তরমুজের বীজ খাওয়া কোন ভাবেই উচিত নয়।

 

 

পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

 

ধন্যবাদ সবাইকে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *