বর্তমানে ২০২০ সাল থেকে ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর থেকে দেখা যাচ্ছে যে ই পাসপোর্ট এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ই পাসপোর্ট এর জনপ্রিয়তা বাড়ার বেশ কিছু কারন ও রেয়েছে। তাই বিভিন্ন সুবিধার কথা চিন্তা করে অনেকেই তাদের কাছে থাকা পুরাতন এম আর পি পাসপোর্ট থেকে রিনিউ করে ই পাসপোর্ট করে নিচ্ছে।
আজকে আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে এম আর পি পাসপোর্ট থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করবেন এবং অনলাইনে কিভাবে পাসপোর্ট রিনিউ করবেন।
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মাবলী 2021
কেন মানুষ ই পাসপোর্ট এর দিকে যাচ্ছেন। এবং ই পাসপোর্ট এর সুবিধা গুলো কি কি চলুন জেনে নিই। আমরা সকলেই অবগত আছি যে ২০২০ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়। তার পর থেকেই মানুষ ই পাসপোর্ট করার দিকে বেশি আগ্রহী।
তার বেশ কিছু কারন ও রয়েছে। ই পাসপোর্টে কিছু নতুন ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক চিপ। যার মাধ্যমে আপনার পাসপোর্ট ফোল্ডারের সকল তথ্য গুলো সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া আপনার পাসপোর্ট টি যদি ই পাসপোর্ট হয়ে থাকে তাহলে আপনি ইমিগ্রেশন এর সময় বেশ সুবিধা পাবেন। যেমনঃ ইমিগ্রেশন এর সময় আপনি ই গেটের মাধ্যমে কোন ধরনের চেকিং ছাড়াই ভিতরে যেতে পারবেন।
এতে করে আপনাকে আর ইমিগ্রেশন করার আগে বিশাল লাইনে দাড়াতে হবে না। যার ফলে ই পাসপোর্ট ব্যবহার করে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার ইমিগ্রেশন সম্পূর্ন করতে পারবেন।তাছাড়া ই পাসপোর্ট এর আরও কিছু সুবিধা রয়েছে।
ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মাবলী ২০২১
বর্তমানে সময়ে বাংলাদেশের সব জেলা গুলোতেই ই পাসপোর্ট করা হয়। এবং বাংলাদেশের সব জেলা গুলোতেই ই পাসপোর্ট করার কার্যক্রম চলছে তাই আপনাকে আপনার এম আর পি পাসপোর্ট টি রিনিউ করে নিতে হবে।
এখন আপনি খুব সহজেই আপনার জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে বা অনলাইনে আপনার এম আর পি পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারেন। তাছাড়া আপনি নিজেই আপনার পাসপোর্ট টি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। অনলাইন থেকে পাসপোর্ট রিনিউ ফর্ম পূরনের মাধ্যমে আপনার আবেদন টি সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
অনলাইনে পাসপোর্ট ফর্ম টি পূরন করার সময় আপনাকে অবশ্যই আপনার এনআাইডি কার্ড অনুযায়ী তথ্য গুলো দিতে হবে। আপনার পাসপোর্ট এর সকল ইনফরমেশন গুলো আপনার এনআইডির সাথে মিল থকতে হবে।তাই ফর্ম পূরন করার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। ফর্মটি পূরন করা হয়ে গেলে সকল ইনফরমেশন সঠিক ভাবে দিয়েছেন কিনা তা পুনরায় আবার দেখে নিবেন।
আপনার পাসপোর্ট এর সাথে যদি আপনার এনআইডির কোন একটিও ইনফরমেশন মিল না থাকে তাহলে আপনাকে পাসপোর্ট অথবা এনআইডি ২ টির যেকোনো একটি কে সংশোধন করতে হবে। তাই শুরুতেই খুব ভালো ভাবে পাসপোর্ট এর সকল ইনফরমেশন আপনার এনআইডি অনুযায়ী দিবেন।
এখন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অনলাইনে ই পাসপোর্ট রিনিউ করবো।
ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন আপনি অনলাইনে করতে পারেন অথবা সরাসরি আপনার জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে করতে পারেন। আপনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে একটি কাজ করবেন সেটি হচ্ছে সরাসরি একটি সাধারণ ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন।
আপনি যখন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন তখন আপনার সামনে একটি অপশন থাকবে সেখানে (Id Documents) একটি অপশন থাকবে এাখানে আপনাকে আপনার পূর্ববর্তী পাসপোর্ট অর্থাৎ পুরাতন এমআরপি (MRP Passport) এই অপশন টি সিলেক্ট করে দিবেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন ২০২২।
আমরা নিচে ধাপ অনুযায়ী দেখবো কিভাবে অনলাইনে ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে হয়।
* প্রথমে আপনাদের পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার জন্য পাসপোর্ট এর মূল ওয়েবসাইটে চলে যেতে। গুগল থেকে (পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন) লিখে সার্চ করলে আপনার সামনে অনেকগুলো রেজাল্ট আসবে সেখান থেকে প্রথম রেজাল্টে ক্লিক করলে আপনাকে পাসপোর্ট আবেদন ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে। আশা করছি আপনারা আবেদন ফর্ম পর্যন্ত আসতে পারবেন।
আপনি যখন (ID Documents) অপশনে আসবেন তখন আপনার সামনে কয়েকটি অপশন সিলেক্ট করতে বলবে। আপনি সেখান থেকে ( Yes I Have A Machine Readable Passport) (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করে দিবেন।
* এখন দ্বিতীয় ধাপে আপনি(What is the reason for your passport request?) এই অপশনটি পেয়ে যাবেন।সেখানে একটি এরোউ(Arrow) চিহ্ন পাবেন সেখানে ক্লিক করবেন এবং আপনি কেন বা আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করার কারনটি নিচের অপশন গুলো থেকে সিলেক্ট করে দিবেন।
নিচে অপশনের মতো করে আপনাদের সুবিধার্থে কারন গুলো উল্লেখ করা হলো।
১। আপনার পাসপোর্ট এর যদি মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তাহলে এই কারটি সিলেক্ট করবেন। (Expired)
২। আপনি যদি পাসপোর্ট টি হারিয়ে ফেলেন বা আপনার পাসপোর্ট টি যদি চুরি হয়ে যায় তাহলে এই কারনটি সিলেক্ট করবেন। ( Lost or Stolen)
৩। আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট এর ডাটা অর্থাৎ তথ্য পরিবর্তন করতে চান তাহলে এই কারনটি সিলেক্ট করবেন। (Data Change)
৪। আপনার পাসপোর্ট টি যদি নষ্ট হয়ে যায় বা ছিড়ে যায় তাহলে এই কারনটি সিলেক্ট করবেন। ( Unusable)
৫। সবশেষে যদি এর বাহিরে অন্য কারন থেকে থাকে তাহলে এই কারনটি সিলেক্ট করবেন। (Other)
* তৃতীয় ধপে এসে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট এর নাম্বার টি দিয়ে দিবেন।
* চতুর্থ ধাপে আপনাকে পাসপোর্ট প্রদান করার তারিখ এবং পাসপোর্ট মেয়াদ উত্তির্ণ হওয়ার তারিখ দিয়ে দিতে হবে। এই তথ্যটি আপনি আপনার পাসপোর্ট এর মধ্যে ছবি যেই পেজটিতে আছে সেখানে পেয়ে যাবেন।
তার পরের কাজ গুলো বাকি সাধারন পাসপোর্ট যেভাবে আবেদন করা হয় ঠিক সেভাবেই করতে হবে। এখন আপনাকে সাবমিট করার জন্য আপনার বিভিন্ন তথ্য যেমন – বাবা মা, স্বামী স্ত্রী এবং আপনার পাসপোর্ট এর ধরন কোনটি তা সিলেক্ট করে আবেদন টি সম্পূর্ণ করে দিবেন।
আপনি অবশ্যই এই গাইডলাইন গুলো ফলো করে কাজ করে আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন আশা করছি।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে যে যে কাগজ পত্র লাগবে।
প্রথমে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট আবেদন পত্রের প্রিন্ট কপি।
তারপর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন সনদ এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোর প্রিন্ট কপি।
আপনার পুরাতন পাসপোর্ট এর যে ডাটা পেজ রয়েছে সে পেইজের প্রিন্ট কপি দিতে হবে।
আপনার পাসপোর্ট এর তথ্য রয়েছে তা সংশোধনের সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি। (তথ্য সংশোধন এর ক্ষেত্রে)
আপনার পাসপোর্ট রিনিউ এর জন্য রেজিষ্ট্রেশন ফর্মের ফটোকপি (অপশনাল)
পাসপোর্ট রিনিউ ফি ২০২২
আপনি যদি পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান তাহলে আপনার একটি নতুন পাসপোর্ট করতে যত টাকা প্রয়োজন হতো রিনিউ করার ক্ষেত্রে ঠিক একই টাকা লাগবে।
* আপনি যদি ১০ বছরের জন্য ৪৮ পেইজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ৬০০০ টাকা প্রয়োজন হবে।
* আপনি যদি ১০ বছরের জন্য ৬৪ পেইজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ৮০০০ টাকা প্রয়োজন হবে।
* আপনি যদি ৫ বছরের জন্য ৪৮ পেইজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ৪০০০ টাকা প্রয়োজন হবে।
* আপনি যদি ৫ বছরের জন্য ৬৪ পেইজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ৬৫০০ টাকা প্রয়োজন হবে। আশা করছি উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী আবেদন করে আপনার পাসপোর্ট টি রিনিউ করতে পারবেন।
পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।