ঋতু পরিবর্তনের কারনে আবহাওয়ার ও পরিবর্তন ঘটে। আর আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের শরীর খাপ খাওয়াতে না পেরে ঠান্ডা, সর্দিকাশি এবং জ্বর হয়। আর এই ঠান্ডা এবং সর্দিকাশি এক সময় ভালো হয়ে গেলেও আমাদের গলায় এবং বুকের মধ্যে কফ জমে যায়। এই পোস্টে আলোচনা করবো কিভাবে গলার এবং বুকের কফ দূর করবেন। তাছাড়া গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো। পুরো পোস্ট টি পড়বেন আশা করছি আপনাদের উপকারে আসবে।
গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এর নাম।
ঠান্ডা সর্দিকাশি এগুলো আমাদের কাছে খুব পরিচিত একটি অসুখ। কিন্তু এই ঠান্ডা এবং সর্দিকাশি থেকে আমাদের দেহে অনেক বড় বড় অসুখ বাসা স্থাপন করতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম হলো কফ জমা। আমাদের শরীরে দুই স্থানে কফ জমা হয়ে থাকে গলায় এবং বুকে।
তবে ঠান্ডা সর্দিকাশি এবং ঠান্ডা থেকে কফ জমা এটি আমাদের শরীরের জন্য একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কফ একটি সময় আমাদের শরীরর এমনিতেই দূর হয়ে যায়। কিন্তু তা হওয়ার জন্য বেশ লম্বা সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই দেখা যায় গলায় বা বুকে কফ জমা হলে আমাদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
তাছাড়াও নানান সমস্যা হয়ে থাকে তাই আমরা সকলেই চাই যে এই কফ গলা বা বুক থেকে দ্রুত কিভাবে দূর করা যয়। গলার কফ দূর করার জন্য আপনারা বেশ কয়েকটি ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। তবে গলায় কফ জমলে তা নিরাময়ের জন্য ডাক্তাররা বেশিরভাগ সময় কফের সিরাপ সেবন করতে বলে। গলার কফ নিরাময়ের জন্য নিচে উল্লেখিত দুটি ট্যাবলেটের মধ্যে একটি ব্যবহার করতে পারেন।
নিচে দুটি গলার কফ দূর করার ট্যাবলেটের নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১। অ্যালকফ কফজেল ট্যাবলেট – Alkof Cofgel Tablet এটি কফ নিরাময়ের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট রোদ করে থাকে।
২। মিউকোলিড ট্যবলেট – Mucolyt Tablate এটি দ্রুত গলার কফ দূর করতে সাহায্য করে।
এই ট্যাবলেট গুলো সেবন করার পূর্বে আপনাদের অবশ্যই ডাক্তাররে পরামর্শ নিতে হবে। তবে গলায় কফ জমা হলে আপনারা প্রাকৃতিক ভাবে তা খুব সহজেই দূর করতে পারবেন। নিচে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে কফ দূর করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
গলার কফ দূর করার সিরাপ।
ঠান্ডা এবং সর্দিকাশি থেকেই আমাদের গলায় এবং বুকে কফ জমা হয়।দেখা যায় ঠান্ডা সর্দিকাশি হলে এবং তা ভালো হয়ে যাওয়ার পরও গলায় এবং বুকে কফ জমা হয়। তাই আমরা এই কফ নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিকারক ঔষধ সেবন করতে চাই। কফের প্রতিকারক ঔষধ হিসেবে কয়েকটি সিরাপ খুব ভাবো কাজ করে।
নিচে কয়েকটি গলার কফ দূর করার সিরাপ এর নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১। Tusca Plus – তুস্কা প্লাস।
২। Adovas – অ্যাডোভাস।
৩। Ambrox – অ্যামব্রক্স।
৪। Ocof – ওকফ।
৫। Askorel – অ্যাসকোরেল।
গলা থেকে কফ নিরাময় করতে উল্লেখিত ৫ টি সিরাপ খুবই কার্যকরী। এই সিরাপ গুলো ব্যবহারের ফলে ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে আপনার গলার কফ নিরাময় হয়ে যাবে।
নিচে উপরে উল্লেখিত সিরাপ গুলোর ব্যবহার বিধি তুলে ধরা হলোঃ
১। Tusca Plus – তুস্কা প্লাসঃ এই সিরাপটি আমাদের গলার কফ পরিষ্কার করে বের করে দেয়। এই সিরাপটি দিনে ৩ বেলা খাওয়ার পর ২ চামচ করে খেতে হয় । একটি ১০০ মিলি সিরাপের দাম ৮০ টাকা।
২। Adovas- অ্যাডোভাসঃ এই সিরাপটি কফ নিরাময়ের পাশাপাশি শুষ্ক কাশি এবং গলার খুসখুসে ভাব দূর করে থাকে। এই সিরাপটি দিনে ৩ বেলা খাওয়ার পরে ২ চামচ করে খেতে হয়। একটি ১০০ মিলি সিরাপের দাম ৬৫ টাকা।
৩। Ambrox – অ্যামব্রক্সঃ এই সিরাপটি গলার এবং বুকের জমাট বেঁধে যাওয়া ঘন কফ দূর করে থাকে এবং কাশি দূর করে থাকে। এই সিরাপটিও দিনে ৩ বেলা খাওয়ার পরে ২ চামচ করে খেতে হয়। একটি ১০০ মিলি সিরাপের দাম ৫০ টাকা।
৪। Ocof – ওকফঃ এটিও আমাদের গলার জামাট বাঁধা কফ দূর করে থাকে। তাছাড়া নাক দিয়ে পানি পরা, নাক বন্ধ হয়ে গেলে তা দূর করে দেয়। এই সিরাপটিও দিনে ৩ বেলা খাওয়ার পরে ২ চামচ করে খেতে হয়। একটি ১০০ মিলি সিরাপের দাম ১০০ টাকা।
৫। Askorel – অ্যাসকোরেলঃ এই সিরাপটি আমাদের গলার মধ্যে কফ জমলে তা নরম করে আমরা যখন মল ত্যাগ করি তখন মলের সাথে বের করে দেয়। এই সিরাপটিও দিনে ৩ বেলা খাওয়ার পরে ২ চামচ করে খেতে হয়। একটি ১০০ মিলি সিরাপের দাম ৮০ টাকা।
গলায় কফ আটকে থাকার কারন।
ঠান্ডা লেগে গলায় কফ জমা একটি স্বাভাবিক অসুখ। এটি নিরাময়ের জন্য আমরা শুরুতেই গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এবং সিরাপ সেবন করে থাকি। কিন্তু আমরা যদি কয়েকটি নিয়ম মেনে ঘরোয়া উপায়ে কিছু ঔষধ সেবন করি তাহলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে আমরা অনেকেই জানতে চাই যে ঠিক কোন কারনে ঠান্ডা লাগলে আমাদের গলায় এবং বুকে কফ জমে যায়।
ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে সাধারনত গলায় বা বুকে কফ জমাট বাঁধে না। গলায় এবং বুকে কফ জমা হওয়ার জন্য অনেকটা আমরা নিজেরাই দায়ী । কারন হলো আমাদের যখন ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হয় তখন তা ভালো হওয়ার জন্য কয়েকদিন যেমন ৪ থেকে ৫ দিন সময় নিয়ে থাকে । কিন্তু আমরা অনেকেই এই সময়টুকু অপেক্ষা না করে ঠান্ডা নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ঔষধ সেবন করে থাকি।
ঔষধ সেবনের ফলে আমাদের ঠান্ডা এবং সর্দিকাশি ভালো হয়ে যায়। তবে ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে কিছু দিন অপেক্ষা না করে অনেক তারাতারি ঔষধ সেবন করার ফলে আমাদের ভিতরে থাকা ময়লা বের হতে পারে না। যা ঔষধ সেবন করায় ঔষধের প্রতিক্রিয়ার ফলে ভিতরে জমাট বেঁধে থেকে যায় যাকে আমরা কফ বলে থাকি ।
তা পরবর্তীতে আমাদের গলায় এবং বুকে কফ হয়ে জমে থাকে। তাই ঠান্ডা লেগে যাতে কফ না হয় সেজন্য আমাদের ঠান্ডা এবং সর্দিকাশি হওয়ার শুরুতেই সতর্ক থাকতে হবে। তাই আমাদের যখন ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হবে তখন তা ভালো হওয়ার জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। এবং ভিতরের ময়লা পুরো পুরি কাশির মাধ্যমে বের হয়ে যেতে দিতে হবে। এভাবে গলা এবং বুকে কফ জমা রোধ করা যেতে পারে।
বুকের কফ বের করার সিরাপ।
আমাদের সকলের কাছেই একটি অতি পরিচিত অসুখ বুকের মধ্যে কফ জমাট বাঁধা। ঠান্ডা সর্দিকাশি এবং অতিরিক্ত কাশি থেকে একটি সময় আমাদের বুকের মধ্যে কফ জমাট বেঁধে যায়। এবং কিছুদিন এইরকম চলতে থাকার পর এটি অনেক বড় আকার ধারন করে ফেলে।
যা আমাদের শ্বাসকষ্ট থেকে থেকে শুরু করে কথা বলার উপর প্রভাব ফেলে। বুকের মধ্যে কফ জমা এই সমস্যাটি অনেকের মধ্যেই হয়ে থাকে। কফ হলে আমরা ঘরোয়া ভাবে এটি খুব সহজেই নিরাময় করতে পারি।তবে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে কফ সমস্যা নিরাময় করতে হয় তা অনেকেই জানে না।
তাই বেশিরভাগ সময় মানুষ বুকে কফ হলে বিভিন্ন ট্যবলেট বা সিরাপ সেবন করে থাকে। তাই বুকের কফ দূর করার জন্য ভালো কয়েকটি সিরাপ তথ্য উল্লেখ করবো। যা সেবনের মাধ্যমে আপনারা কফ জমাট বাঁধা দূর করতে পারবেন।
নিচে বুকের কফ নিরাময়ের জন্য কয়েকটি সিরাপের নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১। মুকোসপেল ( Mucospel ) – এই সিরাপটি বুকের জমাট বেঁধে থাকা কফ নিরাময় করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি সেবন করার ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে বুকের কফ দূর হতে শুরু করবে। এবং কয়েকদিনের মধ্যে বুকের কফ দূয়ে যাবে। একটি ১০০ মিলি সিরাপের মূল্য ৪০ টাকা।
২। এমব্রক্স ( Ambrox ) – এই সিরাপটি আমাদের বুকের মধ্যে জমাট বেঁধে থাকা কফকে নরম করে এবং তরল করে বের করে দেয়। তার পাশাপাশি এই সিরাপটি আমাদের ফুসফুসকে পরিষ্কার করে দেয়। এই সিরাপটি ২ থেকে ৩ দিন সেবন করলে আপনারা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেখতে পারবেন। একটি ১০০ মিলি সিরাপের মূল্য ৫০ টাকা।
৩। রিকফ ( ReCof ) – এই সিরাপটি আমাদের বুকের মধ্যে জমাট বাঁধা কফকে নিরাময় করে। এই সিরাপটির বিশেষ গুন হচ্ছে এটি আমাদের বন্ধ হওয়া নাক সচল করে। তাছাড়া নাক দিয়ে পানি পরা রোধ করে। এই সিরাপটি ও ২ দিন সেবন করলে কফ নরম হয়ে বের হতে শুরু করবে। একটি ১০০ মিলি সিরাপের মূল্য ১০০ টাকা।
গলার এবং বুকের কফ বের করার ঘরোয়া উপায়।
ঠান্ডা এবং সর্দিকাশির কারনে আমাদের বুকে এবং গলায় কফ জমে যায়। এই কফ দূর করার জন্য আমরা অনেকেই বিভিন্ন ঔষধ যেমন: গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এবং সিরাপ সেবন করে থাকি। তবে গলায় এবং বুকে কফ জমা হলে আমরা ঘরোয়া উপায়ে অনেক সহজেই নিরাময় করতে পারি। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে গলার এবং বুকের কফ দূর করবো।
নিচে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে কফ দূর করতে হয় তা ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলোঃ
১। মধু এবং তুলসিপাতা – মধু এবং তুলসি পাতা এসাথে সেবনে গলা এবং বুকের কফ দূর হয়ে যায়। প্রথমে কয়েক মিলি মধু হালকা গরম করে তাতে তুলসিপাতার রস মিশিয়ে নিতে হবে। এটি আপনি দৈনিক দুবার সকালে এবং সন্ধায় সেবন করবেন।
২। মধু এবং আদা – মধু এবং আদা আমাদের গলার এবং বুকের কফ দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে হাপ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ মধু এবং ১/২ চামচ আদার রস পানির সাথে মিশিয়ে নিবেন। এভাবে প্রতিদিন ২ বার সেবন করলে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে বুকের কফ দূর হতে শুরু করবে।
৩। আদা – শুধু মাত্র নিয়মিত নিয়ম মাফিক আদা সেবন করার ফলে আমাদের বুকের কফ দূর হয়ে যায়। আমরা জানি যে আদা কাশির জন্য খুব ভালো একটি ঔষধ। এই আদা আপনারা কুচি করে কেটে লবন দিয়ে দিনে ৩ থেকে ৪ বার সেবন করলে বুকের কফ দূর হয়ে যাবে।কফ দূর করার জন্য আদা সবচেয়ে ভালো একটি প্রতিশোধক।
এই তিনটি ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই বুক থেকে কফ নিরাময় করতে পারবেন। যদি ঘরোয়া উপায়ে কফ সমস্যা নিরাময় না হয় তবে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সরনাপণ্য হবেন।
পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
[…] গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এর নাম। […]
[…] গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এর নাম। […]
[…] গলার কফ দূর করার ট্যাবলেট এর নাম। […]